সর্বশেষ

আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার সংবাদপত্র প্রকাশ করেছিলেন দেশ ও মানবসেবার মহান ব্রত নিয়ে

163
Before post box 1

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দৈনিক আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, বাঙালী মুসলমানদের নব জাগরণের অন্যতম অগ্রদূত আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের ৬০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীন সংবাদপত্র পাঠক সমিতির উদ্যোগে আজ ২৪ সেপ্টেম্বর (২০২২) শনিবার বিকেলে শাহ্ আমানত দরগাহ্ লেইনস্থ তনজিমুল মোসলেমীন এতিমখানা মিলনায়তনে এক দোয়া মাহফিল ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীন সংবাদপত্র পাঠক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক এস.এম. জামালউদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর চৌধুরী সিইনসি স্পেশাল। সেমিনার উদ্বোধন করেন প্রবীণ সাংবাদিক নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ওয়ার্ল্ড এসোসিয়েশন অব প্রেস কাউন্সিল নির্বাহী পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সাবেক সদস্য, সিনিয়র জার্নালিস্টস্ ফোরাম আহ্বায়ক মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত। দোয়া পরিচালনা করেন বিভাগীয় সমাজকল্যাণ ফেডারেশনের মহাসচিব ও তনজিমুল মোসলেমীন এতিমখানার মহাপরিচালক হাফেজ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ। সেমিনারে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দৈনিক নয়াবাংলা সম্পাদক জেড.এম. এনায়েত উল্লাহ হিরু, স্বাধীন সংবাদপত্র পাঠক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, অধ্যাপক ফজলুল কাদের, হাটহাজারী সমাচার সম্পাদক কে.এম. ইউসুফ, মাওলানা আবদুর শুক্কুর প্রমুখ। সেমিনারের প্রারম্ভে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মুহাম্মদ আবদুল হালিম। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রবীণ সাংবাদিক নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন সর্বগুণে গুণান্বিত এক অসাধারণ মানুষ। ইংরেজী শিক্ষিত ও প্রকৌশলী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর কথাবার্তা, স্বভাব-চরিত্র, পোশাক পরিচ্ছদে ইসলামী ভাবধারা ও সংস্কৃতি ফুটে উঠেছিল। তিনি মানুষকে ভালবাসতেন ও মানুষের মঙ্গল চাইতেন আন্তরিকভাবে। আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার শুধু সম্পাদক বা প্রকৌশলী ছিলেন না- ছিলেন এক কৃতি সমাজ সংস্কারক ও বুজুর্গ। আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) বলেছিলেন, বুজুর্গদের জীবন-চরিত আলোচনা করলে আল্লাহর রহমত নাজিল হয়। বুজুর্গ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের জীবনি আলোচনা করে আমরা আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত হই। কাদেরী শওকত বলেন, আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার সংবাদপত্র প্রকাশ করেছিলেন দেশ ও মানবসেবার মহান ব্রত এবং মিশনারী স্প্রিট নিয়ে। এখন অনেকেই ব্যবসার উদ্দেশ্য নিয়ে বা নিজেদের অপকর্মের ঢাল হিসেবে রক্ষা পেতে সংবাদপত্র প্রকাশ করছেন। যাতে অন্য পত্রিকায় এদের দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করতে ইতস্তত হয়। সংবাদপত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হলেও শিল্পপতিরা যারা সংবাদপত্র প্রকাশ করেছে তারা ছাড়া অন্যরা অর্থাৎ যে সকল সাংবাদিক সংবাদপত্র প্রকাশ করে তারা শিল্পের সুযোগ সুবিধা পায়না, অতীতেও পায়নি। কাদেরী শওকত বলেন, আত্মীয়তার কারণে মরহুম আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের কাছ থেকে অনেক স্নেহ, ভালোবাসা ও অনুকরণীয় বিষয় পেয়েছি। যা একজন মানুষকে পুণ্যবান হতে পথ দেখায়। আমরা দেখতাম ইঞ্জিনিয়ার সাহেব গৃহবৃত্ত, তাঁর জমির খেত মজুর সহ সকলকে নিয়ে একসাথে খাবার খেতেন, তাঁর মধ্যে কোনো অহমিকা ছিল না। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরী সিইনসি বলেন, সেই সময়টাতে বাঙালী মুসলমান সমাজ বিশেষ করে শিক্ষা দীক্ষা এবং জ্ঞান চর্চা থেকে অনেকটা বিচ্যূত ছিল। আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার আজাদী পত্রিকার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে চমৎকার একটা দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা জানি ঢাকা থেকে প্রকাশিত হলে অনেকে জাতীয় পত্রিকা হয়ে যায়, তবে আজাদীর সাথে সম্পৃক্ততা জাতীয় পর্যায়ে সকল বুদ্ধিজীবী এবং আমাদের সিভিল সোসাইটি সবার সাথে ছিল। অত্যন্ত কঠিন সময়ে আজাদীর সৃষ্টি, এখন আবারো কঠিন সময়ের সৃষ্টি হয়েছে। আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার সাহস নিয়ে প্রকাশনা জগতে উদাহারণ সৃষ্টি করেছেন। সেটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মতরে বজায় রয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে সাংবাদিক এস.এম. জামাল উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামের সংবাদপত্র শিল্প, মুদ্রণ ও প্রকাশনা জগতে মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের অবদান ঐতিহাসিক। মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার চট্টগ্রামের সাংবাাদিকতার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে, ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, সর্বোপরি ’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং গণতন্ত্রের পথকে সুগম করতে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব প্রতিষ্ঠিত দৈনিক আজাদী অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করছেন—যা অবশ্যই স্মরণযোগ্য। মোহাম্মদ আবদুল খালেদ ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের চরিত্রকে অনুসরণ করলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

after post box 2