সর্বশেষ

আটত্রিশ বছরে পদার্পণ করলো দৈনিক পূর্বকোণ

129
Before post box 1

অধ্যক্ষ এম সোলাইমান কাসেমী :: আজ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সাল ৩৮ বছরে প্রবেশ করেছে আধুনিক সংবাদপত্রের পথিকৃৎ খ্যাত চট্টগ্রামের পাঠক সমাদৃত দেশসেরা আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক পূর্বকোণ । ৩৭ বছর আগে যাত্রা শুরু করা দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকা চট্টগ্রামের সংবাদপত্র জগতে আধুনিকতার সূচনা করেছিল। ক্ষুরধার লেখনী আর বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মধ্য দিয়ে গত সাড়ে তিন দশকে পূর্বকোণ পত্রিকার পাঠকপ্রিয়তা যেমন পেয়েছে, তেমনি সৃষ্টি করেছে অনেক মেধাবী ও খ্যাতিমান সংবাদকর্মী।

কলম সৈনিকরা হচ্ছেন জাতির আলোকিত পথনির্দেশক আর সংবাদপত্র আজ সভ্য সমাজের দৈনন্দিন অবশ্য প্রয়োজনীয় বস্তুতে পরিণত হয়েছে। সমাজ পরিবর্তনে সংবাদপত্রের ভূমিকা অপরিসীম। সমাজের অসঙ্গতি দূর করতে সাধারণ মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল গণমাধ্যম বা সংবাদপত্র। দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকা ১৯৮৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে। সমৃদ্ধ ও আধুনিক চট্টগ্রাম গড়ার অঙ্গীকারে পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠা করেন চট্টলদরদী মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী। ২০০৭ সালে স্থপতি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করার পর থেকে পত্রিকাটির দায়িত্বে আছেন প্রকাশক ও পরিচালনা সম্পাদক হচ্ছেন জসিম উদ্দিন চৌধুরী এবং সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন ডা. ম রমিজউদ্দিন চৌধুরী। দৈনিক পূর্বকোণ চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছে।

অনেক জাতীয় পত্রিকার সংবাদ প্রকাশ ও নির্মাণ শৈলিতে ভুল ত্রুটি লক্ষ্যণীয় হলেও দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকা একটি নির্ভুল সংবাদপত্র হিসেবে পাঠক মহলে সমাদৃত। সেজন্য পত্রিকাটি অর্জন করেছেন ব্যাপক পাঠক প্রিয়তা। সমাজ পরিবর্তনে গত পঁয়ত্রিশ বছর ধরে পূর্বকোণ পত্রিকা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। তৃণমূল মানুষের কথা তুলে ধরে বৃহত্তর চট্টগ্রামে সংবাদপত্রের জগতে এক নতুন দিগন্ত রচনা করেছে দৈনিক পূর্বকোণ।

middle of post box 3

বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনের কারণে চট্টগ্রামের পাঠকদের মাঝে স্বকীয়তা অর্জন করেছে পত্রিকাটি। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবিচল দৈনিক পূর্বকোণ। এ পত্রিকা মাটি ও মানুষের কথা বলে। উন্নয়নের কথা বলে। পূর্বকোণের বস্তুনিষ্ঠতা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে। জন্মলগ্ন থেকেই চট্টগ্রামের উন্নয়নে পূর্বকোণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশের সংকটে পথ দেখিয়েছে। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে। সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে।

পত্রিকার ছাপার মান, নির্ভুল সচিত্র সংবাদ পরিবেশন, সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয়, চিঠিপত্র, পাঠকের অভিমত, বচন সমাচার, সুস্থতায় বাঁচি মহৌষধ হাসি ও প্রাণের ভাষায় মনের কথা, ফিচার বিভাগের নাগরদোলা, কলরোল, টুকিটাকি, পরিবেশ ও বিজ্ঞান, ভ্রমণ, রমণীয়, রাশিফল, শহর থেকে দূরে, প্রবাস, আবহাওয়া, চাকরি, অর্থ-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক, চট্টগ্রাম,জাতীয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য-প্রযুক্তি, বিনোদন-শিল্পকলা, অনলাইন জরিপ, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও খেলাধুলা প্রশংসার দাবী রাখে।

চট্টগ্রামের পাঠক যেভাবে চায়, ঠিক সেভাবেই তাদের মনের ভাষা বুঝেই এ পত্রিকার সবগুলো বিভাগ সাজাতে পেরেছে, সক্ষম হয়েছে পাঠকের চিন্তা-চেতনা ও রুচির সাথে। মাদক, সন্ত্রাস, গুজব, জঙ্গিবাদ, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, পাহাড় কাটা, মাটি কাটা, পরিবেশন নষ্ট করা সব সংবাদই এখানে সমানভাবে গুরুত্ব পায়। সেই সাথে শোকদিবস, শোক সংবাদ, প্রেস বিজ্ঞপ্তি, উন্নয়ন সংবাদ, স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদগুলোও গুরুত্বের সাথে উঠে আসে। একজন পাঠক হিসেবে আমি দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি। আমাদের বিশ্বাস আগামিতেও দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকবে। দেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অতন্দ্র প্রহীরর ন্যায় কাজ করবে। দৈনিক পূর্বকোণ চিরজীবী হোক।

লেখক: অধ্যক্ষ এম সোলাইমান কাসেমী, পিএইচ.ডি গবেষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

after post box 2