সর্বশেষ

উন্নয়নে দেশ বদলেছে, যাদের চোখ আছে তারা দেখছে: প্রধানমন্ত্রী

110
Before post box 1

 

middle of post box 3

নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ সত্যিই বদলেছে, নির্বিঘ্নে চলছে উন্নয়ন দেশের কর্মযজ্ঞ। যাদের চোখ আছে তারা দেশের এই উন্নয়নের চিত্র দেখছেন।
তিনি বলেন, এখন আর ‘হাওয়া’ ভবন নেই। উন্নয়ন করতে হলে এখন আর কোথাও টাকা দিতে হয় না। ব্যবসায়িরাও ইচ্ছে মতো বিনিয়োগ করতে পারছেন। রবিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের আওতায় অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী এসময় ৪টি ক্যাটাগরিতে মোট ৫৩টি ফলক উন্মোচন করেন।
সরকার প্রধান বলেন, কোভিডের আঘাত ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক মন্দাতেও বাংলাদেশ খারাপ নেই। এমন সময়েও দেশে নতুন নতুন শিল্পায়ন হচ্ছে। আজকের দিনটা আমাদের জন্য আনন্দের, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও আমরা এতগুলো শিল্প অবকাঠামোর ভিত্তি প্রস্তর ও বাণিজ্যিক উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে পারছি। বর্তমান সরকারের ক্রমাগত প্রচেষ্টার ফলে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে শিল্পায়নের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু যখন যুক্তফ্রন্ট সরকারের শ্রম, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী ছিলেন, সে সময়, ১৯৫৭ সালের ১৪ মার্চ বিসিক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বিসিক প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বাংলাদেশে শিল্পায়নের প্রথম সোপান রচিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী এসময় নিজেদের প্রজ্ঞা, মেধা, মনন আর স্বকীয়তাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির বৃহত্তর উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার জন্য নিজেকে তৈরী করতে সবাইকে আহ্বান জানান। সরকার প্রধান এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে প্রথমবারের মতো ৪টি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান এবং সাফল্যের এই ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য সকল বিনিয়োগকারীর প্রতি আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার সরকার সরকারি খাস, পতিত জমি এবং চরাঞ্চলকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তিনি এসময় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণের সর্বোচ্চ কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন হবে এবং জাতীয় অর্থনীতির পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ও কর্মহীন মানুষের জন্য চাহিদাভিত্তিক কারিগরী ও অন্যান্য প্রশিক্ষণের জন্য কেন্দ্র স্থাপন করছেন।
অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে ইতোমধ্যে প্রায় ৪৫ হাজার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেখানে কয়েক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রত্যেক সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে যথেষ্ঠ পরিমাণে জমি বরাদ্দ রাখা হবে, যাতে তারা সেখানে শিল্প স্থাপন করতে পারেন।
তিনি সকল অর্থনৈতিক অঞ্চলে নারীবান্ধব কর্ম পরিবেশের বিষয়ে বলেন, এ লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নের কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। এছাড়া তিনি জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে শিশুদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনের গুরুত্ব দেন। শিল্প স্থাপনের ফলে যাতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব না পড়ে সেজন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিবেশবান্ধব শিল্পাঞ্চলের ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে লেক, জলাধার, কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার ব্যবস্থার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণাগার, পানি শোধনাগারসহ আধুনিক সকল সুবিধা যাতে বাস্তবায়ন করা যায়, সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার মোট ১০০টি শিল্প নগর করছে। এসব শিল্প নগরে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশী বিনিয়োগ হবে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ফেনী, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডে দেশের সর্ববৃহৎ শিল্প নগরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান।

after post box 2