সর্বশেষ

গণসমাবেশে রেকর্ড গড়তে চায় খুলনা বিএনপি

109
Before post box 1

 

নিউজ ডেস্ক : আড়মোড়া ভেঙে নড়েচড়ে বসছে খুলনা বিএনপি। নানা চাপের মধ্যেও চোয়াল শক্ত করে কড়া কথা বলতে শুরু করেছেন দলটির নেতারা। ২২ অক্টোবর খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশকে সামনে রেখে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন এখানকার নেতাকর্মীরা। সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ করতে চায় খুলনা বিএনপি।সমাবেশ সফলে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। ১৬টি উপ কমিটি রাত দিন কাজ করছে।

টানা দেড় দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির জনপ্রিয়তা যে এখনো কমেনি সেটার প্রমাণ দিতে চায় এ সমাবেশের মাধ্যমে। সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। যে কোনো মূল্যে সমাবেশ সফল করার ঘোষণা দিয়েছেন নেতারা। সমাবেশে কমপক্ষে ৫ লাখ নেতাকর্মীর উপস্থিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর সমাবেশের মাধ্যমে সরকারকে বড় ধরনের মেসেজ দিতে চান তারা।

বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সমাবেশে বিপুল নেতাকর্মী ও সমর্থকের সমাগম ঘটিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চায় দলটি।

জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ চলমান আন্দোলনে ভোলায় নুরে আলম ও আবদুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সীগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আবদুল আলিমকে হত্যা, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে বিভাগীয় শহরে ১০টি গণসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি।

জানা গেছে, মহানগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কর্মসূচি সমন্বয় করবেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বিএনপির নেতারা বলছেন, চট্টগ্রামে সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের বিদায়ের আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। যদিও সরকার জনস্রোতে ভীত হয়ে গণতান্ত্রিক সভা-সমাবেশগুলোতে বাধা দিচ্ছে।

middle of post box 3

আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। বিএনপি যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য শতভাগ প্রস্তুত রয়েছে।

এদিকে কর্মসূচিকে সফল করতে মামলা-মোকদ্দমায় আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরাও প্রকাশ্যে এসেছেন। সমাবেশে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বিপুল অংশগ্রহণ করাতে চান আয়োজকরা।

মহানগরীতে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, সমাবেশের নামে সহিংসতা কিংবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে বিএনপিকে প্রতিহত করা হবে।

বিএনপির নেতারা বলেছেন, ‘তারা শান্তিপূর্ণভাবে মহাসমাবেশ করতে চান। তবে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হলে পাল্টা জবাব দেবেন দলীয় নেতাকর্মীরা। ’
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য ও মিডিয়া সাব কমিটির আহ্বায়ক এহতেশামুল হক শাওন জানান, খুলনা নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে গণসমাবেশ হবে। সমাবেশ সফল করতে বিএনপি এবং প্রতিটি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা-সমাবেশ ও প্রচার চালানো হচ্ছে।

গণ সমাবেশকে ঘিরে দেশের এবং দেশের বাইরে অবস্থানরত লাখো মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। সমাবেশের প্রস্ততি, জনগণের অংশগ্রহণ, প্রশাসনের বাধা, হামলা কিংবা পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার শঙ্কায় ২-৩ দিন আগেই কর্মীদৈর সমাবেশস্থলে উপস্থিতির নানা ঘটনা সেই আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে আমার চাচ্ছি সেই সব প্রতিটি ঘটনা যেন মূল ধারার মিডিয়ায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় যথাযথ প্রচার পায়। খুলনার সমাবেশে জনসমুদ্র করার টার্গেট রয়েছে। আমাদের কর্মসূচি সফল হলে পরের কর্মসূচিগুলোতে আরও বেশি মানুষ রাজপথে নামবে। ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে সর্বশেষ মহাসমাবেশ থেকে রাতের ভোটে ক্ষমতা দখল করা অবৈধ সরকার হঠানোর চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক আসবে।

সাবেক ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমান যাদু বলেন, ২২ অক্টোবর খুলনা বিভাগীয় গণ-সমাবেশ স্মরণকালের সেরা জমায়েত হবে খুলনা নগরীতে। আশা করি একটি শান্তিপূর্ণ ও স্বতস্ফূর্ত সমাবেশ হবে।
বিএনপির এ বিভাগীয় সমাবেশে কোনো বাধা এলে সরাসরি প্রতিরোধ করা হবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সাবেক এ ছাত্রদল নেতা।

খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগীয় গণসমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা অতীতের সকল রেকর্ড ভাঙতে চাই। আশা করছি সমাবেশে ৫ লাখের বেশি মানুষের সমাগম ঘটবে।

তিনি আরো বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ থেকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ছাড়াও ৯টি দাবি তুলে ধরবেন নেতারা। এর মধ্যে রয়েছে- খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, চাল-ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও শিক্ষা খাতে ভয়াবহ দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ, দুর্নীতির রাহুগ্রাসে ভঙ্গুর স্বাস্থ্য খাতের হরিলুট বন্ধ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, সাংবাদিকসহ সাধারণ নাগরিকদের মামলায় হয়রানি বন্ধ, ব্যাংকিং খাতে লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচার, শেয়ারবাজার লুণ্ঠনের অর্থ উদ্ধার এবং কৃষক, শ্রমিক, নিম্নবিত্ত মানুষের ন্যায্য দাবি মানতে হবে।

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে নগরীতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

after post box 2